
লাগেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সাধারণ যাত্রী ও প্রবাসীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে লাগেজ চুরি, কাটা বা ভাঙচুরের অভিযোগ ও ভোগান্তি বিদ্যমান। যাত্রীদের এই দুর্ভোগ লাঘব এবং বাংলাদেশে আগমনের পর লাগেজ সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের অ-ব্যবস্থাপনা শতভাগ প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ বিমান।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের নিজস্ব ফ্লাইটগুলোর লাগেজ ব্যবস্থাপনায় বডি ক্যামেরা ব্যবহার শুরু হয়েছে। বিমান থেকে লাগেজ নামানো ও ওঠানোর দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বডি চেকের পর তাদের গায়ে বডি ক্যামেরা সংযুক্ত করে বাল্ক লাগেজ হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ কার্যক্রম তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পাশাপাশি এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিয়মিত সশরীরে পরিদর্শন ও যাচাই করছেন। ফলে বিমানের নিজস্ব ফ্লাইটগুলোর লাগেজ ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ ও নিশ্ছিদ্র করা সম্ভব হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম বা অ-ব্যবস্থাপনা প্রমাণিত হলে বডি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ব্যবহৃত বডি ক্যামেরাগুলোতে ৯০ দিন পর্যন্ত আল্ট্রা-ওয়াইড ফুটেজ সংরক্ষণ করা যায়।
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সকল এয়ারলাইন্সের লাগেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ বিমান। শুধু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স নিজেদের লাগেজ ব্যবস্থাপনা নিজেরাই করে থাকে।
সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক খবর হলো—বাংলাদেশে আগমনের পর যাতে কোনো যাত্রীর লাগেজ কাটা বা চুরির শিকার না হয়, সে লক্ষ্যে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্যান্য সকল এয়ারলাইন্সের লাগেজ ওঠানো-নামানোর ক্ষেত্রেও শতভাগ বডি ক্যামেরা ব্যবহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশ বিমানের জেনারেল ম্যানেজার এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছেন।
এর ফলে ভবিষ্যতে লাগেজ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ উঠলে বডি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে প্রকৃত ঘটনা ও দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। এমনকি কোনো লাগেজ বিদেশ থেকেই কাটা বা খোলা অবস্থায় এসেছে কি না—তাও যাচাই করা সম্ভব হবে।
এই আধুনিক ও সময়োপযোগী উদ্যোগ বাস্তবায়নে যাঁরা পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যকর বাস্তবায়নে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ।
আমরা বিশ্বাস করি, যদি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনভাবে ও আইন মেনে ‘টিম বাংলাদেশ’ হিসেবে কাজ করি, তাহলে এ ধরনের বহু অ-ব্যবস্থাপনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যাত্রীর অধিকার রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিয়মিত তদারকি ও পরিদর্শনের মাধ্যমে এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট যাত্রী ও প্রবাসীদের পাশে রয়েছেন।
সব ধরনের জল্পনা-কল্পনা, অযাচিত সমালোচনা ও ধান্দাবাজি পরিহার করে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তাকর্মীদের কার্যক্রম অন-রেকর্ড মনিটরিং নিশ্চিত করতে অন-বডি সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের এই উদ্যোগ—নিঃসন্দেহে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

প্রকাশক ও সম্পাদক : এ কে এম মাজেদুল আলম (ইভান) 















