
মাগুরার শালিখায় স্বামীর শাবলের আঘাতে গৃহবধূ নিহত, ঘাতক স্বামী পলাতক
এ কে এম মাজেদুল আলম(ইভান)
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর হাতে নির্মমভাবে প্রাণ গেল সোনালী খাতুন (৩৮) নামের এক গৃহবধূর। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত সোনালী খাতুনের বাড়ি শালিখার তাড়খড়ি ইউনিয়নের ছান্ডড়া গ্রামে। তিনি লতিফ মণ্ডলের কন্যা। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত স্বামী মিজানুর রহমান (মোল্লা) এলাকা থেকে পালিয়ে যান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে সোনালীর বিয়ে হয় মিজানুরের সঙ্গে। তাদের সংসারে এক ছেলে (২০) ও এক মেয়ে (১১) রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বামী মিজানুর সোনালীকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পেতে সোনালী ২০২১ সালে স্বামীকে এবং ২০২৩ সালে ছেলেকে কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরবে পাঠান। কিন্তু তারা বিদেশে দুই বছর না কাটিয়েই দেশে ফিরে আসেন।
সম্প্রতি মিজানুর চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। ঘটনার আগের রাত, শুক্রবার তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফোন রিসিভে দেরি হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ বাড়িতে ফিরে আসেন।
সোনালী তখন ঘরে ছিলেন। ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় মিজানুর প্রথমে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন এবং পরে ঘরের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপর শুরু হয় মারধর। একপর্যায়ে ঘরের ভেতরে থাকা একটি শাবল দিয়ে সোনালীর মাথায় আঘাত করেন তিনি। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন সোনালী।
ঘটনার সময় ঘরে থাকা তাদের মেয়ে মদিনার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে মিজানুর পালিয়ে যান। পরে ঘরের মেঝেতে সোনালীর রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
খবর পেয়ে শালিখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শালিখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওলি মিয়া জানান, নিহতের ভাই আবু দাউদ বাদী হয়ে মিজানুর রহমানকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।